শ্রীপুর সংবাদদাতা : স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে হাসিঠাট্টার এক পর্যায়ে স্ত্রীর হাত-পা বেঁধে, মুখে কাপড় গুঁজে ও মোবাইলে ভিডিও চালু করেন এক স্বামী।
পরে স্ত্রীর ওড়না গলায় পেচিয়ে ফ্যানের হুকের সাথে ঝুলে আত্মহত্যা করেন হৃদয় নামের যুবক।
গত মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে গাজীপুরের শ্রীপুরের মাওনা মসজিদ মোড় এলাকায় মর্মান্তিক এ ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে।
নিহত হৃদয় (২২) মাগুরা জেলার মোহাম্মদপুর থানার পারিঘাটা গ্রামের পিঞ্জর মিয়া শাহিনের ছেলে। তিনি স্থানীয়
আফাজ উদ্দিনের বাড়িতে ভাড়ায় থেকে স্থানীয় একটি কাপড়ের দোকানে চাকুরি করতেন।
নিহতের দ্বিতীয় স্ত্রী ও স্বজনদের বরাত দিয়ে স্থানীয় জামাল উদ্দিন বলেন, “প্রায় দুই যুগ ধরে হৃদয়ের বাবা তার
শ্বশুড় বাড়ি পৌর এলাকার কেওয়া পশ্চিম খন্ড গ্রামের নুরুল চেয়ারম্যানের বাড়ির এলাকায় বসবাস করে।
মোহনা নামের হৃদয়ের স্ত্রী থাকলেও তিন-চার মাস আগে আর্জিনার সাথে হৃদয়ের বিয়ে হয়।
তাদের বিয়ের বিষয়টি গোপন ছিল। বিয়ের পর হৃদয় মসজিদ মোড় এলাকার আফাজ উদ্দিনের বহুতল ভবনের
নিচ তলায় একটি ফ্ল্যাটের কক্ষ ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন। সেখান থেকে আর্জিনা তার বাবার বাড়ি যাওয়া আসা করেন।
মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আরজিনা ওই ভাড়া বাড়িতে আসেন, খবর পেয়ে হৃদয়ও আসেন। কিছু সময়
পর সে আবার দোকানে চলে যায়। আধ ঘন্টা এসে দরজা বন্ধ করে দিয়ে, স্বামী-স্ত্রী হাসিঠাট্টা শুরু করে।
এরপর সে প্রথমে আর্জিনার বাম হাত, পরে ডান হাত খাটের সাথে বেঁধে ফেলেন।
এরপর দুই পা বেঁধে ফেলে মুখে কাপড় গুঁজে দিয়ে আত্মহত্যার জন্য ঘরে ফ্যানের হুকে ওড়না লাগাতে থাকেন।
এসময় আর্জিনা ডাক চিৎকার শুরু করলে তার মুখের ভেতর গুজে দেয়া কাপড় বের হয়ে আসলে ফের তার মুখে
গেঞ্জি গুজে দেয় হৃদয়। এরপরই সে ফ্যানের হুকে ওড়না লাগিয়ে ঝুলে পরে।
পরে আর্জিনার ডাক চিৎকারে কিছু সময় স্থানীয়রা ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙ্গে হৃদেয়ের ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পায় এবং
আর্জিনাকে হাত-পা বাঁধা ও মুখে কাপড় গুজে দেয়া অবস্থায় দেখতে পায়।
পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে হৃদয়ের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে।
নিহতের দ্বিতীয় স্ত্রী আর্জিনা সাংবাদিকদের বলেন, “আমি জানতাম হৃদয়ের আগে একটা স্ত্রী আছে। সে আমাকে
বিয়ের প্রস্তাব দিলে আমি তা মেনে নিয়ে বিয়ে করি।
কিন্তু কি কারণে হৃদয় আত্মহত্যা করলো সে বিষয়ে তিনি কিছুই জানাতে পারেননি”।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি শাহ জামান বলেন, খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। পরিবারের
আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ চলমান।
ভিডিও ভিডিও ভিডিও