ভালোবাসা দিবসে সিঙ্গেলরা যা করতে পারেন

ভালোবাসা দিবসে সিঙ্গেলরা যা করতে পারেন

অনলাইন ডেস্ক : একটা মিম ভাইরাল হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে ফেসবুকে। ভালোবাসা দিবসে একটা ছেলে আর একটা
মেয়ে (মেয়েটার হাতে গোলাপের তোড়া) সুন্দর জামাকাপড় পরে হাত ধরে হাঁটছে।
পেছন থেকে একটা ‘সিঙ্গেল’ মেয়ে তার জামাকাপড় লন্ড্রিতে নিয়ে যাওয়ার পথে ওই জুটিকে মন দিয়ে তাকিয়ে
দেখতে দেখতে যাচ্ছে। হঠাৎ হোঁচট খেয়ে হাতের জামাকাপড় ছড়িয়ে–ছিটিয়ে সে রাস্তায় পড়ে গেছে।
দুটি ছবি পাশাপাশি কোলাজ করে বানানো মিমটি অনেকেই ‘এইটা (সিঙ্গেল মেয়েটা) আমি’ ক্যাপশন দিয়ে শেয়ার করছে!

বসন্ত আসতে থাকলেই প্রকৃতির সঙ্গে রঙিন হয়ে ওঠে আমাদের চারপাশের লোকজনও। বইমেলা, ক্যাম্পাস বা
পার্ক, শাড়ি আর পাঞ্জাবি পরে হাঁটতে থাকা রংবেরঙের যুগল আপনাকে প্রতিনিয়ত মনে করিয়ে দিতে থাকে, বসন্ত এসে গেছে! তবে এই বসন্ত সবার জীবনে সমানভাবে আসে না, বরং কিছু কিছু মানুষের কাছে এই বসন্ত হয়ে ওঠে
শ্রাবণের আকাশের মতোই রাশভারী।

গোলাপ, চকলেট বা আলিঙ্গন দিবস আসার সঙ্গে সঙ্গে সিঙ্গেল লোকজনের হাহাকারে সিক্ত হয়ে ওঠে সামাজিক
যোগাযোগমাধ্যম। ভ্যালেন্টাইনের দিন তো অনেকে বলেই বসে, এ বছরেও এই দিনে সিঙ্গেল, এই জীবনের কী মানে? অথচ সিঙ্গেল থাকা মানে জীবনের শেষ নয়, এমনকি সিঙ্গেল থাকা মানে ভ্যালেন্টাইনও শেষ নয়। বরং
চমৎকার কিছু কাজের মাধ্যমে আপনিও দিনটাকে করে তুলতে পারেন সুন্দর ও আনন্দময়।

সিঙ্গেল বন্ধুদের নিয়ে পার্টি
বলা হয়ে থাকে, বন্ধু ফেল করলে কষ্ট লাগে। কিন্তু বন্ধু প্রথম হলে আরও বেশি খারাপ লাগে। তাই এই কয়েক দিন
যেকোনো মূল্যে প্রেমের পরীক্ষায় প্রথম হওয়া বন্ধুদের এড়িয়ে চলুন; বরং আপনার মতোই সিঙ্গেল বন্ধুদের সঙ্গে
চলাফেরা বাড়িয়ে দিন। ভ্যালেন্টাইন দিবসে সিঙ্গেল বন্ধুদের নিয়ে একটা পার্টির ব্যবস্থা করুন। এতে আপনাদের
কারোরই আর ভ্যালেন্টাইনের দিন একা একা লাগবে না।

ফেসবুক বন্ধ রেখে বই পড়ুন
ভ্যালেন্টাইনে একা একা লাগার আরও একটা বড় কারণ হলো, ফেসবুকে অন্যদের যুগল ছবি দেখা; বরং অন্তত এই
দিন বা সম্ভব হলে কয়েকটা দিনের জন্য ফেসবুক থেকে ছুটি নিয়ে নিন। হাতে তুলে নিন পড়ব পড়ব করেও পড়া
না হওয়া চমৎকার কোনো বই। এতে একদিকে আপনার বই পড়ার অভ্যাস হলো, অন্যদিকে ভ্যালেন্টাইনের
রংবেরঙের ছবি দেখে আর হাহুতাশও করতে হলো না!

সিনেমা দেখুন তবে রোমান্টিক জনরার নয়
ভ্যালেন্টাইনের দিনটাকে চাইলে মুভি দিবসও ঘোষণা করতে পারেন বা সারা দিনে লম্বা সিরিজটা দেখে ফেলতে
পারেন। তবে সাবধান, বেশি রোমান্টিক সিনেমা আবার আপনাকে একাকিত্বের সাগর পাড়েই টেনে নিয়ে যাবে।

বন্ধুবান্ধব ও পরিবারকে ভালোবাসুন
ভালোবাসা দিবসে যে শুধু প্রেমিক বা প্রেমিকাকেই ভালোবাসতে হবে, এই কথা কে বলেছে? বরং কাছের বন্ধু বা পরিবারের লোকজনের কাছেও নিজের ভালোবাসা প্রকাশ করতে পারেন। পাঠাতে পারেন ছোট ছোট উপহার। এতে
তারা যেমন খুশি হবে, আপনাদের বন্ধনও সুন্দর হবে অনেকখানি। অনেক দিন ফোন করব করব করে করা হয় না,
এমন বন্ধু ও আত্মীয়স্বজনদের ফোন করুন।

গরিব–দুঃখী মানুষের পাশে দাঁড়ান
ভালোবাসা দিবসে খুব একা একা লাগছে? করার মতো কাজ খুঁজে পাচ্ছেন না? আশপাশের পথশিশুদের কিছু খাবার
বা বেলুন কিনে দিন। গরিব রিকশাওয়ালাকে এক বেলা পেট ভরে খাওয়ান বা রাস্তার শিশুদের নিয়েই কোনো
রেস্টুরেন্টে খেতে বসে যান। দেখবেন, আপনার ভ্যালেন্টাইন হয়ে উঠেছে আর দশজনের চেয়ে অনেক বেশি সুন্দর।

রেস্টুরেন্ট বা শপিং মলকে বোকা বানান
ভ্যালেন্টাইন উপলক্ষে রেস্টুরেন্ট বা শপিং মলে নানা কিসিমের যুগল অফার দেয়। আপনি সিঙ্গেল তো কী হয়েছে? আপনার মতোই আরেকজন সিঙ্গেল বন্ধু খুঁজে বের করে ওই অফারে খাওয়াদাওয়া বা কেনাকাটা করে আসেন। মা–
বাবাকে নিয়েও শপিংয়ে বের হতে পারেন। কেনাকাটা শেষে খাওয়াদাওয়া করে ঘরে ফিরলেন! একদিকে কম টাকায় খাওয়ার আনন্দ, অন্যদিকে যুগলদের জন্য অফার সিঙ্গেল হয়েও নিজে সেই সুবিধা নেওয়ার আনন্দ মিলেমিশে একাকার হয়ে যাবে।

জমে থাকা কাজগুলো করে ফেলুন
ওপরের কোনো কিছুই ভালো না লাগলে ভ্যালেন্টাইনের কথাটাই মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে দিন। ফেসবুক বন্ধ করে
দৈনন্দিন সব কাজে ব্যস্ত হয়ে যান। জমে রাখা কাজগুলো করে ফেলুন। ঘর গোছানো, বাথরুম পরিষ্কার, খাবার রান্না
করা বা বইয়ের তাক গোছানো ও গাছে পানি দেওয়ার মতো কাজ করতে করতে কখন যে ভ্যালেন্টাইন পার হয়ে
যাবে, টেরই পাবেন না।

প্রাক্তনের অপছন্দের কাজ
প্রাক্তনের যা কিছু অপছন্দ, সব আজই করুন। ভালোবাসা দিবস এলেই যাদের প্রাক্তনের কথা মনে পড়ে, তাদের
জন্য এটি ভালো একটা কৌশল। আপনার প্রাক্তন বিটিএসের গান একদম সহ্য করতে পারত না? শুনে ফেলুন। এতে নিজের মধ্যে একটা জয়ী জয়ী ভাব আসবে, স্মৃতিকাতরতা কমবে অনেকখানি।

সর্বোপরি, ভ্যালেন্টাইনে ভালোবাসা পাওয়ার জন্য অধীর হয়ে যাবেন না। একাকিত্বের দুঃখ আর হতাশা ঝেড়ে ফেলে
বরং নিজেকে ভালোবাসুন। নিজেকে সময় দিন। নিজের ব্যক্তিত্বকে সুন্দর করতে কাজ করে যান। নিজেই নিজের
জন্য যথেষ্ট হওয়ার মতো সুন্দর ব্যাপার এই পৃথিবীতে আর কিছু আছে?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *