টাঙ্গাইল প্রতিনিধি : টাঙ্গাইলে আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় দুজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে।
তবে এই মামলার প্রধান আসামি আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) আমানুর রহমান খান রানা ও তাঁর তিন ভাইসহ ১০ জনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।
টাঙ্গাইলের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. মাহমুদুল হাসান আজ রোববার বিকেলে এই মামলার রায় ঘোষনা করেন।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত দুজন হলেন মোহাম্মদ আলী ও কবির হোসেন।
মোহাম্মদ আলী ২০১৪ সালে গ্রেপ্তার হওয়ার পর ফারুক হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন। তাঁর জবানবন্দিতে এই হত্যার সঙ্গে আমানুর রহমান ও তাঁর ভাইদের জড়িত থাকার বিষয়টি বের হয়ে আসে। জামিনে মুক্ত হওয়ার পর তিনি পলাতক আছেন। অপর দণ্ডিত কবির হোসেন ২০১৪ সাল থেকে আত্মগোপনে আছেন।
গত ২৬ জানুয়ারি ফারুক হত্যা মামলার বাদী ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক টাঙ্গাইলের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে শেষ হয়েছে। ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদের গুলিবিদ্ধ লাশ তার কলেজপাড়া এলাকার বাসার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। ঘটনার তিন দিন পর তার স্ত্রী নাহার আহমেদ বাদী হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন।
২০১৪ সালের আগস্টে এ হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে আনিসুল ইসলাম রাজা ও মোহাম্মদ আলী নামক দুইজনকে গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেফতার করে। তারা আদালতে জবানবন্দি দেন। তাদের জবানবন্দিতে আওয়ামী দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা, তার ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার তৎকালীন মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাকন ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পার নাম বের হয়ে আসে।
এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ওয়াহেদ, আবদুল খালেক ও সনি আদালতে জবানবন্দি দেন। তাদের জবানবন্দিতেও হত্যার বর্ণনা উঠে আসে। এরপর চার ভাই আত্মগোপনে চলে যান। আমানুর রাহমান খান রানা আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। তিন বছর হাজতে থাকার পর জামিন লাভ করেন।
গত ৫ আগস্টের পর তিনি আবার আত্মগোপনে চলে যান। অপর দুই ভাই ২০১৪ সাল থেকে বিদেশে অবস্থান করছেন বলে তাদের ঘনিষ্ঠরা জানিয়েছেন। গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম মাহফিজুর রহমান ২০১৬ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি চার ভাইসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। ২০১৭ সালের ৬ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে এ মামলার বিচার কাজ শুরু হয়। বিচার চলাকালে দুই আসামি আনিছুর রহমান ওরফে রাজা ও মোহাম্মদ সমির কারাগারে মৃত্যুবরণ করেছেন। গত ২৬ জানুয়ারি ফারুক হত্যা মামলার যুক্তিতর্ক শেষ হয়।