শ্রীপুর সংবাদদাতা : গাজীপুরের সাফারি পার্কে জনবল সংকট ও বেষ্টনী নিরাপত্তা অবহেলার বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে পার্ক সংস্কারের জরুরি উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
বুধবার (৯ এপ্রিল) দুপুরের দিকে গাজীপুরের শ্রীপুরে অবস্থিত গাজীপুর সাফারি পার্ক পরিদর্শনে শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
এর আগে, সকাল এগারোটার দিকে সার্বিক অবস্থা দেখার জন্য পার্কে আসেন তিনি। ভেতরে প্রবেশের পর একে একে পার্কের সকল দিক ঘুরে দেখেন। প্রাণীর অবস্থান, সংখ্যা, থাকার পরিবেশ, খাবার ও নিরাপত্তা বেষ্টনীর খোঁজ খবর নেন।
এসময় তাঁর সাথে ছিলেন, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক নাফিসা আরেফীন, গাজীপুরের পুলিশ সুপার ড. চৌধুরী মো: যাবের সাদেক ,শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ব্যরিস্টার সজিব আহমেদ, গাজীপুর পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম, বন্য প্রাণী পরিদর্শক আনিসুর রহমানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সাংবাদিকদের বলেন,’হাতি দিয়ে চাঁদাবাজির কোনো সুযোগ নেই। যেখানেই এমন পাওয়া যাবে তাদেরকে ধরে নিয়ে আসার জন্য বন বিভাগকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও লাইসেন্স দিয়ে হাতি পালনের বিষয়টি সম্পর্কে একটি বিধিমালা চুড়ান্ত করা হয়েছে। আর বন্য হাতি ও মানুষের মধ্যে দ্বন্দ দীর্ঘদিনের। বিশেষ করে চট্টগ্রামে। আমরা স্থানীয় মানুষকে প্রশিক্ষিত করে সেটা কমিয়ে আনার চেষ্টা করছি। শেরপুরেও ফসলি জমিতে হাতির আক্রমণ ঠেকাতে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। হাতিকে খাবার ও চলার জায়গা না দিলে তো দ্বন্দ্ব মেটানো সম্ভব নয়। তাই, আমরা খাস জায়গা বরাদ্দ নিয়েছি। যাতে হাতির খাবার ও চলাচল নিশ্চিত করা যায়।
গাজীপুর পার্কের সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, এখানে একটি সঙ্ঘবদ্ধ অপরাধী চক্র নেই তা অস্বীকার করা যাচ্ছে না। কেননা, বাংলাদেশকে ট্রান্জিট ধরেই বিভিন্ন দেশে পাচার কাজ চলে। হারিয়ে যাওয়ার ১৪দিন পর আইনী ব্যবস্থা নেওয়া যা হারানো জিনিস পাওয়ার সুযোগ ক্ষীণ হয়ে যাওয়ার বিষয় স্পষ্ট। তাই, ওই সঙ্ঘবদ্ধ চক্রকে কিভাবে খোঁজে বের করা যায় সে ব্যপারে সবার সাথে আলোচনা করা হয়েছে। ‘
তিনি বলেন,’পার্কের কর্তৃপক্ষের দায়িত্বের অবহেলা আছে কিনা এবং পার্কের প্রাণী গুলোর যথাযথ সংরক্ষণ হচ্ছে কিনা সে বিষয়ে দ্রুতই তদন্ত করে এর পেছনে কেউ জড়িত থাকলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।’
লেমন পাখী চুরির ঘটনায় অভিযোগ হলেও থানা পুলিশের দায়িত্বশীল ভুমিকার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন,’ অপরাধ প্রমাণিত হওয়ার আগেই তো কাউকে অপরাধী বলা যায় না। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখবো। লেমন চুরির ঘটনায় নিখুঁত ভাবে বিস্তারিত তদন্ত করবো। প্রয়োজনে বাইরের বিশেষজ্ঞ নিযুক্ত করা হবে। ভবিষ্যতে যাতে এমন ঘটনা না ঘটে সেবিষয়ে সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বেষ্টনীর ভেতর ঢুকে কিভাবে প্রাণী গুলো চুরি হলো সেটা উদঘাটন করা হবে। এরজন্য তদন্তকারী দলের পাশাপাশি ক্রাইম এক্সপার্ট দিয়ে মূল ঘটনা বের করা হবে।’
শেষ কথায় উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘এখানে আমাদের কর্মকান্ডে বিশেষজ্ঞ বা বন্যপ্রাণী নিয়ে কাজ করে এমন মানুষ সম্পৃক্ত নেই। আমি সরকারে ঢুকে দেখেছি সরকার শুধু সরকার হিসেবেই কাজ করে। সমাজে যে আরও এক্সপার্ট আছে যাদের সম্পৃক্ত করলে সরকারেরও গ্রহনযোগ্যতা বাড়ে,সরকারেরও কাজের চাপটা কমে আসে সেটাকে আমি সম্পৃক্ত করে দিবো।’