গাজীপুরের কালীগঞ্জে ফসলী জমির মাটি কেটে নিচ্ছে মাটিখেঁকো সিন্ডিকেট

গাজীপুরের কালীগঞ্জে ফসলী জমির মাটি কেটে নিচ্ছে মাটিখেঁকো সিন্ডিকেট

গাজীপুর সংবাদাদাতা : গাজীপুরের কালীগঞ্জে ভূমি আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে চলছে ফসলি জমির মাটি কেনাবেচা। এভাবে কৃষিজমির মাটি কাটায় একদিকে যেমন ফসলি জমির পরিমাণ কমে যাচ্ছে, অন্যদিকে অনুর্বর হয়ে পড়ছে চাষের জমি। ফসলি জমির মাটি বিক্রির এই সিন্ডিকেট ক্রমেই বেপরোয়া হয়ে উঠছে।

কৃষি সংশ্লিষ্টদের তথ্য মতে, ফসল উৎপাদনের জন্য যে জৈব পদার্থ দরকার তা সাধারণত মাটির ওপর থেকে আট ইঞ্চি গভীর পর্যন্ত থাকে। মাটির উপরিভাগ কেটে নিলে জমির উর্বরতা শক্তি হারায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার নাগরী ইউনিয়নের পিপুলিয়া এলাকায় ফসলি জমির মাটি কাটছে একটি চক্র। এসব ফসলি আবাদি কৃষিজমির মাটি ভেকু মেশিন (এক্সকাভেটর) দিয়ে কেটে বিভিন্ন ইটভাটা ও স্থাপনা নির্মাণকারীদের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে। রাত-দিন মাটি বহনকারী লড়ি ও ড্রাম্প ট্রাকের শব্দে নাকাল হয়ে পড়েছে স্থানীয় মানুষের জনজীবন। পাশাপাশি এলাকার রাস্তাঘাটসহ অন্যান্য ফসলি জমি ক্ষতি এবং পরিবেশের চরম বিপর্যয়ের মুখে পড়ছে।

কৃষি জমির উপরিভাগের মাটি কাটার ফলে উচু জমি নিচু এবং নিচু জমি পুকুরে পরিণত হয়ে শ্রেণি পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। ফলে বর্ষা মৌসুমে ওই সব জমিতে ধান রোপণ করা যাচ্ছে না।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নূরি তাসমিন বলেন, ‘কৃষিজমির মাটি কাটার তথ্য পেলে আমরা খোঁজখবর নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেই। পিপুলিয়া এলাকায় ফসলি আবাদি কৃষিজমির মাটি ভেকু মেশিন দিয়ে কেটে নেওয়ার খবর শুনে অভিযান পরিচালনা করে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু চক্রটি প্রশাসনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে পূনরায় মাটি কাটার চেষ্টা করছে। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন সুযোগ দেওয়া হবে না।

কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার তনিমা আফ্রাদ বলেন, বেলাই বিল সংলগ্ন কৃষি জমিতে পুনরায় মাটি কাটার অভিযোগ পাওয়ার পর গত ২০ ফেব্রুয়ারি প্রথম বার সহকারী কমিশনার ভূমি অভিযান পরিচালনা করে মাটি কাটার কাজ বন্ধ করেছিল। কিন্তু আজ মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে আবার খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে তা পূনরায় বন্ধ করা হয়েছে।

তবে অভিযানের খবর পেয়ে অপরাধী যারা ছিল তারা পালিয়েছে। তাই কোন অপরাধী না পাওয়ায় ঘটনাস্থল থেকে একটি মাটি কাটার ভেকু মেশিন (এক্সকেভেটর) জব্দ করে তা কালীগঞ্জ থানার জিম্মায় দেয়া হয়েছে। নিয়মিত কাজের অংশ হিসিবে কৃষি জমির মাটি কাটার ব্যাপারে প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান উপজেলার এই নির্বাহী কর্মকর্তা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *