টাঙ্গাইল সংবাদদাতা : টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে তুলে নিয়ে যাওয়া কিশোরীকে ১৩ দিন পর আ’লীগ নেতা ও সাবেক
ইউপি চেয়ারম্যান হযরত আলী মিলিটারির (৭৫) ধনবাড়ী শহরের বাসা থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
ওই নেতাকে কোন রকম আইনের আওতায় না এনে শুধু কিশোরীকে উদ্ধার দেখিয়ে বাড়িতে ফিরিয়ে দিয়ে এসেছে পুলিশ।
আলোচিত হযরত আলী ধনবাড়ী মুশুদ্দি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি এবং একই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান।
ধনবাড়ী থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, মেয়ে মিসিং হওয়ার বিষয়ে বাবার লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে কয়েক ঘন্টার মধ্যে সাবেক
চেয়ারম্যানের বাসা থেকে মেয়েটিকে উদ্ধার করে রোববার রাত ১১ টার দিকে বাড়িতে দিয়ে আসা হয়েছে।
আরও পড়ুন
সূর্যকে পুরোপুরি ঢেকে ফেলবে চাঁদ, দিন হবে রাতের মতো অন্ধকার
কিশোরী মেয়েটি জানায়, বিদ্যালয়ের অনুষ্ঠান শেষে ১৩ ফেব্রুয়ারি বাড়ি ফেরার পথে হযরত আলী তাকে বাড়ি
পৌছানোর কথা বলে মোটরসাইকেলে তুলে ধনবাড়ী বাসায় নিয়ে যান।
সেখানে নিয়ে জন্মসনদে ১০ ডিসেম্বর ২০০৯ এর স্থলে শুধু সালে ২০০৫ লিখে ১৮ বছর বয়স দেখিয়ে জোর করে বিয়ে করেছেন।
ভয় দেখিয়ে রাজি করানো হয়েছে বলে কিশোরীটি অভিযোগ করেন। কিশোরীটি আরো জানায়, সম্মান হারিয়ে আমি
ও আমার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। এর সুষ্ঠু বিচার দাবিও করেছে মেয়েটি।
ধনবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাজ্জাদ হোসেন জানান, এ ঘটনায় হযরত আলীর বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলা হয় না।
ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত দিলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অথবা এ্যাসিল্যান্ড
পুলিশের সহায়তায় বাল্য বিয়ে করার অপরাধে হযরত আলীকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জেল জরিমানা করতে পারেন।
উল্লেখ্য, ধনবাড়ীর মুশুদ্দি আফাজ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ওই কিশোরী একই ইউনিয়নের ঝোপনা পূর্বপাড়ার জনৈক কৃষকের মেয়ে।
আরও পড়ুন
সখীপুরে রান্নাঘর থেকে বাবার রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার, ছেলে পলাতক
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি বিদ্যালয়ের বার্ষিক স্কুল অনুষ্ঠান চলাকালে ক্যাম্পাস থেকে কৌশলে তাকে তুলে নিয়ে যায় একই
ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি হযরত আলী।
খোঁজাখুজি করে না পেয়ে সপ্তাহ শেষে মেয়ের অবস্থান হযরত আলীর কাছে নিশ্চিত হয়ে ২০ ফেব্রুয়ারি ইউনিয়ন পরিষদে লিখিত অভিযোগ দেন।
কিশোরীর কৃষক বাবা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়ে মেয়ে উদ্ধারের দাবি জানান।
ইউনিয়ন পরিষদ বিষয়টির মীমাংসা করতে না পেরে মেয়ের বাবাকে পুলিশের কাছে অভিযোগ দিতে বলে। শনিবার
সন্ধ্যায় পুলিশে লিখিত দিলে রোববার রাতে অভিযান চালিয়ে পুলিশ ওই কিশোরীকে উদ্ধার করে।
অভিযুক্ত হযরত আলীর ব্যক্তিগত মোবাইল ( ০১৭১২-৭৭৯৮২৫) নম্বরে বার বার ফোন করে বন্ধ পাওয়া গেছে।