শ্রীপুর সংবাদদাতা : গাজীপুরের শ্রীপুরে স্বামীর নির্যাতন সইতে না পেড়ে ঘরের আড়ার সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে স্বর্না আক্তার নামের এক গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছেন। সোমবার সকালের দিকে উপজেলার কেওয়া পূর্ব খন্ড আশপাটা (উকিল বাড়ি) তাজউদ্দিনের ভাড়া বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত স্বর্ণা আক্তার (২৫) কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার দুলালপুর গ্রামের শাহজাহানের মেয়ে। উপজেলার তাজউদ্দিনের বাড়িতে ভাড়া থেকে স্থানীয় একটি কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। স্বামী হাসান রাজমিস্ত্রীর কাজ করেন।
নিহতের স্বজনরা জানান, চার বছর আগে হাসানের সাথে স্বর্ণা আক্তারের বিয়ে হয়। তাদের সংসারে একটা সন্তান রয়েছে। প্রায় সময় স্বর্ণা স্বামীর হাতে নির্যাতনের শিকার হতেন। টাকা পয়সার সমস্যা হলেই হাসান তার স্ত্রীকে শ্বশুর বাড়ি থেকে টাকা আনতে মারধর করত।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রোববার রাতে কারখানা থেকে বাসায় আসার পর স্বামীর সাথে ঝগড়া হয় গৃহবধূ স্বর্নার। এরপর রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন স্বর্ণা আক্তার। সোমবার ভোররাতে স্বর্ণা আক্তার ঘরের আড়ার সাথে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন পুলিশে খবর দেন।
নিহতের বাবা শাহজাহান কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, বড় শখ করে মেয়েটাকে হাসানের সাথে বিয়ে দিয়েছিলাম। বিয়ের পর থেকেই টাকার জন্য আমার মেয়েকে চাপ দিতো। আমার টাকা দিয়ে হাসান তার গ্রামের বাড়িতে ঘরবাড়ি করল। এক সপ্তাহ ধরে আবার টাকার জন্য চাপ দিতেছিল। দুই দিন আগে মেয়েটা আমার কাছ থেকে টাকা নিতে আসছিল। টাকা না নিয়ে গেলে স্বামীর নির্যাতনের শিকার হতে হবে বলে জানিয়েছিল। মেয়েটাকে বাড়িতে বা রাস্তায় প্রায় সময় মারধর করতো তার স্বামী। স্বামীর নির্যাতন সইতে না পেড়ে মেয়েটা আমার আত্মহত্যার পথ বেছে নিছে। আমি এর বিচার চাই।
শ্রীপুর থানার উপপরিদর্শক এসআই মাহবুব বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুরের শহিদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। রিপোর্ট হাতে পেলে ও উর্ধতন কর্মকর্তাদের সিদ্ধান্তে এ ঘটনায় পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।